ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামে আনসারুল ইসলাম মাছ চাষে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মৃত কেরামত আলীর সন্তান আনসারুল, যিনি ২০২২ সালের মার্চ মাসে ‘অফ-ফ্লেভার মুক্ত পাঙ্গাশ-কার্প মিশ্রচাষ’ পদ্ধতি নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন, বর্তমানে স্থানীয় পর্যায়ে সফল একজন মৎস্য উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত। শুরুতে ৪টি পুকুরে চাষ শুরু করলেও বর্তমানে তার পুকুরের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮টিতে।
আনসারুল বর্তমানে ৫০ শতক আয়তনের পুকুরে মিশ্রভাবে পাঙ্গাশ, কার্প এবং তেলাপিয়া মাছ চাষ করছেন। মাছ চাষের ফলে তিনি প্রতি বছর প্রায় ১৭ লাখ টাকা আয় করছেন। এছাড়া তার উদ্যোগ থেকে মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
আনসারুল ইসলাম জানান, “আমি ছোট থেকেই মাছ চাষের প্রতি আকর্ষিত ছিলাম, কিন্তু সঠিক পদ্ধতি না জানার কারণে সফল হতে পারিনি। ইএসডিও থেকে কারিগরি সহায়তা ও ঋণ পেয়ে আমি আমার কার্যক্রম শুরু করি। অফ-ফ্লেভার মুক্ত পদ্ধতিটি কাজে লাগিয়ে আমার মাছের স্বাদ ও মান উন্নত হয়েছে, যা ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে সাহায্য করছে।”
আনসারুলের সাফল্যে এলাকাবাসী অত্যন্ত খুশি। গড়েয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা রহিম উদ্দিন বলেন, “আনসারুল ভাইয়ের মাছ চাষ দেখে আমাদের মধ্যেও আগ্রহ জন্মেছে। তার মতো সফল হতে চাই। তার উদ্যোগে আমাদের এলাকায় নতুন একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।”
আনসারুলের এ সফলতা শুধুমাত্র তার নিজস্ব নয়, বরং এটি স্থানীয় মানুষের জন্য উদাহরণ এবং অনুপ্রেরণার উৎস। তার এই উদ্যোগে ইএসডিও’র কারিগরি ও ঋণ সহায়তা এবং সরকারি সহায়তা প্রদানের উদ্যোগকে সবাই প্রশংসা করছে।
ইএসডিও’র মৎস্য অফিসার হরুন অর রশিদ বলেন, “আনসারুলের এই সফলতার পেছনে সঠিক পরামর্শ ও প্রশিক্ষণের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা পিকেএসএফের অর্থায়নে ইএসডিও সমন্বিত কৃষি ইউনিটের মৎস্য খাতের আওতায় তাকে মাছ চাষে উন্নত প্রযুক্তি ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করেছি। তার এই সাফল্য অন্য মাছ চাষিদের জন্যও অনুপ্রেরণা হতে পারে।”
ঠাকুরগাঁও সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আয়েশা আকতার বলেন, “আনসারুল ইসলাম একজন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মাছ চাষে এমন সাফল্য শুধু ব্যক্তিগত উন্নয়নই নয়, বরং স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সরকারি সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে আমরা এই চাষিদের পাশে দাঁড়াতে সর্বদা প্রস্তুত আছি।”